শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

ভীষন অস্থিরতার রাত

ভীষন অস্থিরতার রাত

মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ

নিউ ইয়রক,
৯/১১/২০০৯
থমথমে রাত,ঘনকালো গভীর কালোরাত
আবার এক পশলা বৃষ্টি বয়ে গেল।
ডাউনটাউনের নীরবতা আমার গায়ে ঝিলিক মারে,
কাঁটার মতো বিঁধে।
হাডসনের তরল জল খুব কাঁপছিলো ভীষন অস্থিরতায়,
যেনো শহরে আজ নেকড়ে বাঘ কালোদাগ এঁকে দিলো।
বিশ্ববানিজ্য কেন্দ্র নিষ্ঠুর রাত জেগে ছিলো।
এক পলক ঘুমায়নি টাওয়ার,
হাজার মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে।
দুই পা খাড়া,সারারাত বোবার মতো দাড়িয়ে,
বাতাসের কান আছে,শো শো শব্দে কাঁপে ভীত।
একি এক নিষ্ঠুর রাত কাটে আমার।
জানার কোনও উপায় ছিলোনা ভোরের বার্তা,
কিম্বা ঘাতকের ধ্বংসলীলার প্রলয় যাত্রা।

বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

শাহনাজের পদাবলি/ মুখোশধারী নোংরা মানুষ

শাহনাজের পদাবলি
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ

মুখোশধারী নোংরা মানুষ

শাহনাজঃ
চারপাশে এত মুখোশপরা মানুষজন,
এদেরকে চিনতে তিনদিন কিম্বা সাতদিন লাগে,
বেশি অভিজ্ঞ খেলাড়িকে পনেরোদিন লাগে।
বন্ধ করো নিষ্ঠুর এই খেলা।
মাঝে মাঝে ওদের কুৎসিত মুখোশটা টেনে ছিড়ে দিতে,
কিন্তু তাতেই আমার হাত নোংরা হবে,
তাই আমার সীমানার প্রাচীরটাকে আরেকটু উঁচু করে দিলাম।
এটাই বিজ্ঞলোকের মানের কাজ বটে।

আজিজ মোহাম্মদ ভাইঃ
মিথ্যা হুমকির জন্য তোমাকে জেলে যেতে হবে।
তখন আমাকে উকিল ব্যারিষ্টার মাসুদকে খুঁজতে হবে।
আবার হয়তো কাজী অফিসে গিয়ে ওই পাজীটার সাথে
তোমাকে বিয়ে দিতে হবে।

শাহনাজঃ
আস্তাগফিরুল্লাহ। আমি যদি জেলে যাই তবে তারে ফিনিস করেই যাবো।
যাতে আর কোন শয়তানের কাছে যেতে না হয় আমাকে ।
কারাগারই হবে আমার পরিবার।
আর শয়তানতো শয়তান। তার সাথে কেন মানুষের বিয়ের অনুষ্ঠান।
তুই কি আমাকে বিশ্বাস করিস না ভাই?
কেমন করে বলতে পারলি তুই।
মনে বড় কষ্ট দিলি তাই।
আমার উপর কি তোর ফেইথ নাই?
আজান দিচ্ছে,আমি নামাজে যাই।

আজিজ মোহাম্মদ ভাইঃ
তুই একি বল্লি বইনে,
আমি না তোর পরদেশী ভাই আপনজনে
মাটির দুলাল যে কাঁন্দায়,
তারে মাফ করেনা আল্লাহতালায়,
বোনতো ভাইয়ের মতই হয়,
শান্ত হও,আছে পাশে দয়াময়,
বিশ্বাসে আছো , এবং আমার নিঃশ্বাসে।
ভাই আর বোনের সম্পর্ক বড়ই নিটোল এই জগতে।

শাহনাজঃ
আল্লাহ তোকে খুব পাক্কা ঈমানদার বানালো কি শখে?
ঈমানের এতই জোর যে কমিনা শয়তান ভয়ে ভয়ে থাকে,
শাহনাজের পদাবলি যখন বাংলার আনাচে কানাচে,
কবিতার পংতিমালার স্রোতে আমার ভাইয়ের পরান নাচে।

আজিজ মোহাম্মদ ভাইঃ
"মানুষের মন হইলো মসজিদ কিম্বা মন্দির
একবার যদি ভাংগো
আজীবন তুমি কান্দো
আহারে মাটির দুলাল
করে শুধু উলাল আর উলাল
এই দুই দিনের দুনিয়ায়,
আমি আল্লাহরে ডাকি
খাই দাই আর ঘুমাই,
পরজগতে আমার কোন টেনশন নাই।"

শাহনাজঃ
দিলাম আমি দুই ফোঁটা জল,
হাত পাতো
হাত পাতো
নয়তো বুক পেতে
নিলে থাকবেনা আর
আমার জীবনের কোলাহল।

আজিজ মোহাম্মদ ভাইঃ

প্রতিটি মানুষ বিক্ষ্যাত
কেউবা জীবনে
কেউবা যৌবনে
ভালোবাসার ছন্দে ছন্দে পদ্য রচে
জীবনের গদ্যে নানান রঙ্গের ফুল ফোটে
ভাঙ্গে কতো ভুল
নারীর কোমল দৃষ্টি
অব্যক্ত ভাষা
জাগায় কতইনা আশা,
মৌনতার ভাষায়।
তুমি আমি সে
ব্যতিক্রম কিসে।

শাহনাজঃ
কিন্তু আমার পংতিমালায় ফাঁসির রজ্জু,
আমার কবিতা তালাক দেয় অতি চালাকদের,
কারন তারা অজস্র বিবি রাখে।
আমার কবিতার কালোরাত পাঠ হনুদের জানাজা
জাহান্নাম যেনো হয় ওই চালাক কাকের ঠিকানা,
আতরের বদলে দিতে হয় তারে ইতরের বাতাস
আমার কবিতা যমদূত মেঘকালো আকাশ।

আজিজ মোহাম্মদ ভাইঃ
ইতরেরা বাস করে সমাজের ভিতরে,
ইতরের ভাষায় বড়ই কাতর সবাই,
বুকে একফোটা রক্ত থাকতে তার নিস্তার নাই।

শাহনাজঃ
আমার বুকের দীর্ঘনিশ্বাস আর আটকাতে পারলাম না।
আমি কমজোরি নারী।।
আমার আশেপাশের মানুষ যেন কেমন এক অদ্ভুত আচরন করে।
কারো মনে আমি আঘাত দিতে পারিনা,নিজেরই মন ভাংগি আমি।
দশজন যদি আমায় বিয়ে করতে চায় ,আমি তা মানবো কেন?
আমার ভালো লাগা না লাগার কি দাম নাই?
মনমন্দির যদি ভাঙ্গে তাতে ভাঙ্গুক,
অভিশাপ দেয় যদি দেয় তাতে, দিক।

আজিজ মোহাম্মদ ভাইঃ
জানি আমি জানি
বুঝি আমি সকল আকুতি আর মিনতি ,
কবরের নিসংগতার নাই কোনো বিরতি।
শাহনাজঃ
"রাত্রি অন্ধকার,
কু্কুরের চিৎকার,
অশরীরী আত্মার আনাঘোনা
কিছু কি আছে অজানা?
গুমরে গুমরে কাদছে কারা?
হবেনা আর তাদের ফিরা
চলে গেছে যারা।"

মানব জমিন
শাহনাজের পদাবলি
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ


রাজপুত

আমি গেরামের সহজ সরল এক মাইয়্যা
দিন কাটাই নাচিঁয়া কুদিয়া,
রাতের বেলায় স্বপন দেখি রাজপুত
দিনের বেলায় মিলে যেন এক টাউট।
দাও দিয়া দিমু কোপ কইলে পর
আসেনা আর কাছে,নাগালের ভিতর।


জোনাকিদের মিছিলে

গ্রাম বাংলার খাল বিল নদী নালা এবং সবুজ শ্যামল ঘাস
বনলতা আর ফলমুলে যখন গড়ে জীবনের নির্যাস,
যখন মক্তবেতে মৌলানা মারতো থাপ্পর
হইলে পর মদের লম্বা টানের ভুল,
গাল ফুলে লাল।
আমার বাল্যকাল আমার সোনালি সকাল
আমার রুপালি বিকালের গান
নাচাঁয় আমার প্রান।
পুকুরে সাঁতার কাটি আর শাপলা তুলি
ডুব দিয়ে নিখোঁজ আষাঢ়ের ভরা জলে
আনন্দের বন্যায় কাটে শৈশব
রাত কাটে আমার জোনাকিদের মিছিলে।

শাহনাজের পদতলে গড়ায় কত পদ্মফুল
কতইনা ভ্রমরা হয় আকুল।

দাবি
ভাইয়া আমারে আইফোন কিনা দিবিনা?
না দিলে তুই আর মাই ভাই থাকবিনা।

ভানবাসি আমি ঢাকা শহরে
নৌকা চালাই কত জোরে
ঢাকার অলিতে গলিতে
ফুতপাতে রাজপথে।



হায়েনার কালোদাত

বদর বদর

Hayenar Kalodat

আমার কবিতার কালরাত
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ

শাহনাজের পদাবলি

হায়েনার কালোদাত কতো লম্বা
আতরের গন্ধে ভরা তার জোব্বা।
যৌনতার মিছিলে,
গীত করে উলঙ্গ নৃত্যের তালে তালে।
ভুবুক্ষু দানব মানবের রুপেই করে বসবাস,
বিকৃতরুচির ঘটে ভয়ঙ্কর বিকাশ।
নীতির বাক্যবানে জর্জরিত,
আর ভিতরে ভিতরে ইতরের চিৎকার।
কুৎসিত কদাকার কালোদাত তার
ভাংতে চায় সুরম্য প্রাচীর আমার সীমানার ।
নিউ‌ ইয়র্ক,২০০৯।

Badr Badr

আমার কবিতার কালরাত
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ

বদর বদর

সত্যের জয় চারিদিকে মিথ্যার পরাজয়,
রমজানের যুদ্ধ ছিলো বদর বদর।
মোমিনের খঞ্জর অতীব ধারালো
নাই তার কোনো ডর।
গায়েবের শক্তি কাজ করে দুনিয়াবী স্বার্থের বিরুদ্ধে,
তোরা কে কে যাবি আজি ঈমান রক্ষার যুদ্ধে।
পরাজয়ে ডরেনা বীর,
যখন থাকে মুখে তাকভীর।
জাহান্নাম,
আল্লাহের শত্রুদিগের পরিণাম।
মাবুদের দুনিয়া ছোট হয়ে যায়,
নাফরমানী করে যে, আল্লাহতালায়।

নিউ ইয়র্ক,
৯/১০/২০০৯